ছাত্রদের জন্য লাভজনক ১০ টি ব্যবসা আইডিয়া

161 0
ছাত্রদের জন্য ব্যবসা

ছাত্রদের জন্য ব্যবসাঃ বর্তমান সময়ে অনেকে যেকোনো কাজের পাশাপাশি ছোটখাটো কোনো ব্যবসা করতে চান। ছাত্ররাও কিন্তু এই দিক থেকে ব্যতিক্রম নয়।এমন অনেক ছাত্র রয়েছে যারা পড়াশোনা চলাকালীন অর্থাৎ ছাত্রজীবনে ব্যবসা করতে চান।কিন্তু তারা সঠিক গাইডলাইন পান না যে ছাত্র জীবনে কোন ব্যবসা শুরু করলে ভালো হবে। আজকে আমি এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা ছাত্রদের জন্য সেরা কয়েকটি ইউনিক বিজনেস আইডিয়া সম্পর্কে বলবো। তাহলে চলুন দেরী না করে শুরু করা যাক:-

 

ছাত্রদের জন্য সেরা দশটি ব্যবসার আইডিয়া

১.অনলাইন কোচিং সেন্টার

যারা ছাত্র জীবনে পড়াশোনার পাশাপাশি যেকোনো কাজ করে ইনকাম করতে চান তাদের জন্য এই আইডিয়াটা চমৎকার। বর্তমানে অনলাইনে কোচিং সেন্টার খোলার মাধ্যমে অনেক ভাল ছাত্র-ছাত্রি সেখান থেকে প্রচুর পরিমাণে অর্থ উপার্জন করে নিচ্ছে।

 

অনলাইনে কোচিং সেন্টার খোলার সুবিধা হচ্ছে আপনারা এখানে কোন ধরনের খরচ না করে শুধুমাত্র নিজের দক্ষতা কে পুঁজি করে ভালো অর্থ উপার্জন করে নিতে পারবেন।

 

ধরুন আপনি ইংরেজি বিষয়ে খুবই দক্ষ তাহলে আপনি ৬০ দিনের ৯০ দিনের জন্য একটি ইংরেজী কোর্সের কোচিং সেন্টার চালু করলেন এবং সেখানে যেসব সদস্যরা ভর্তি হতে ইচ্ছুক তাদের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি ঠিক করে দিলেন।

 

এভাবে যত বেশি ছাত্র-ছাত্রী কোচিং সেন্টারে যুক্ত করতে পারবেন আপনারা আয়ের পরিমাণ টা ঠিক ততটাই বেশি বৃদ্ধি পাবে। এটাকে ব্যবসায়িকভাবেও অনেকে করে থাকেন।তাই ছাত্রজীবনে যদি পড়াশোনার পাশাপাশি কিছু করতে চান তাহলে অনলাইন কোচিং সেন্টার চালু করতে পারেন।

 

২.বইয়ের দোকান দিয়ে ব্যবসা 

 

ছাত্র অবস্থায় আমাদের অনেকেরই পড়াশোনা নিয়ে অনেক বেশি ব্যস্ত থাকতে হয়। তাই এই সময়ে তেমন বেশি সময় পাওয়া যায় না বাড়তি কোনো কাজ করার জন্য।

 

বাড়তি কাজ করতে গেলে পড়াশোনার অনেক ক্ষতিও হয়ে যায়।তাই ভালো একটি স্থানে যদি বইয়ের দোকান দেওয়া যাই তাহলে পড়াশোনার পাশাপাশি একটি ব্যবসা করা হবে এবং পড়াশোনাও ঠিক থাকবে।

 

অনেকে বিভিন্ন ধরনের বই পড়তে পছন্দ করে থাকেন তারা এসে আপনার দোকান থেকে এই সকল বইগুলো ক্রয় করবে এবং এখান থেকে আপনার কিছু পরিমাণ লাভ আসবে।যেহেতু আপনি অবসর টাইম থেকে সময় দিচ্ছেন তাই পড়াশোনার তেমন বেশি ক্ষতিও হবে না। তাই ছাত্রদের জন্য ব্যবসা গুলোর মধ্যে এই ব্যবসাটিকে সেরা ব্যবসা হিসেবে ধরা হয়ে থাকে।

 

অন্য পোস্টঃকাপড়ের ব্যবসা শুরু করে লাখ টাকা ইনকাম করার উপায় 

 

৩.কনটেন্ট রাইটিং এজেন্সি ব্যবসা

 

অনলাইনে কনটেন্ট রাইটিং কে সবচেয়ে সম্মানজনক পেশা হিসাবে ধরা হয়ে থাকে। ছাত্র জীবনে পড়াশোনার পাশাপাশি চাইলে কন্টেন্ট রাইটিং এর কাজ শেখা যায়।

 

কন্টেন্ট রাইটিং এর কাজটি সম্পূর্ণ শিখে কিছু বন্ধুদের এই কাজগুলো শেখানোর মাধ্যমে আপনি চাইলে একটি কনটেন্ট রাইটিং টিম তৈরি করতে পারেন।

 

কনটেন্ট রাইটিং টিম তৈরি করা হয়ে গেলে বিভিন্ন এজেন্সি থেকে কাজ নিয়ে তখন সেই কাজ গুলো সঠিক সময়ে সাবমিট করবেন। কাজ গুলো সঠিক সময়ে সম্পন্ন করা হলে তারা নির্দিষ্ট পরিমান টাকা দিবে।

 

এভাবে আপনাদের কাজের গুণগত মান যদি অনেক ভালো হয়ে থাকে তাহলে তার ক্লায়েন্টের অভাব হবে না।তাই যদি ছাত্রজীবনে ব্যবসা করতে চান তাহলে এটাকে টার্গেট করে সামনে এগিয়ে যেতে পারেন।

 

৪.ব্লগিং করতে পারেন 

 

অনেকের হয়তো ব্লগিং সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকতে পারে। ব্লগিং হচ্ছে অনলাইনে লেখালেখি করার পেশা। বর্তমান সময়ে আমাদের দেশে অসংখ্য ব্লগার রয়েছে যারা প্রতিমাসে ১-২ ঘন্টা ব্লগিং করে অনায়াসেই ১০০০ থেকে ২০০০ ডলার আয় করে থাকেন।

 

ছাত্র জীবন ব্লগিং শুরু করার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় বলে আমি মনে করি। যদি ছাত্রজীবনে আপনারা ব্লগিং শুরু করেন তাহলে পড়াশোনা শেষ হয়ে যাওয়ার পরপরই আপনারা এখান থেকে ভালো একটি স্যালারি পাবেন প্রতিমাসে।

 

যদি একটানা তিন থেকে চার বছর পড়াশোনার পাশাপাশি ব্লগিং করতে পারেন তাহলে লেখাপড়া শেষ করে যদি চাকরি না পেয়ে থাকেন তাও এখান থেকে আপনি ভালো কিছু পাবেন। তাই যারা ছাত্রজীবনে ব্যবসা করবেন বলে ভাবছেন তারা পড়াশোনার পাশাপাশি ব্লগিং শুরু করতে পারেন।

 

৫.মেসো অ্যাপে প্রোডাক্ট বিক্রি করে 

 

মেসো অ্যাপ হচ্ছে এমন একটি অ্যাপ যেখানে হাজার হাজার প্রোডাক্ট রয়েছে এবং আপনাকে এই প্রোডাক্ট গুলো বিক্রি করে দেওয়ার মাধ্যমে কমিশন দেওয়া হবে।

 

অর্থাৎ আপনাকে মেসো আ্যাপে অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে এবং আপনি যদি সেখান থেকে প্রোডাক্ট রিসেল করতে চান তাহলে ফেসবুক পেজ অথবা ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে সেই প্রোডাক্টের লিংকের মাধ্যমে প্রোডাক্ট বিক্রি করে দিতে হবে।

 

আপনারা এই পদ্ধতিতে যত বেশি প্রোডাক্ট বিক্রি করতে পারবেন ততবেশি কমিশন পাবেন। যারা ছাত্র রয়েছে তারা চাইলে পড়াশোনার পাশাপাশি এই কাজটিও শুরু করতে পারেন।অনেকে মেসো অ্যাপে ২ থেকে ৩ ঘন্টা কাজ করে প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা অনায়াসেই আয় করে নিচ্ছে।

 

অন্য পোস্টঃলস ছাড়া করা যায় পাঁচটি দারুন ব্যবসা আইডিয়া

 

৬.মৃৎ শিল্পের ব্যবসা

 

মৃৎশিল্পের ব্যবসা বলতে মাটি দিয়ে তৈরি বিভিন্ন ধরনের শিল্পকে বোঝানো হয়। ছোটবেলায় অনেকে মাটি দিয়ে হাতি, ঘোড়া এবং আরো অনেক ধরনের উপকরণ তৈরি করা দেখেছেন।এগুলোকে সাধারনত মৃৎশিল্প বলে।

 

মৃৎশিল্পের চাহিদা কিন্তু এখনও রয়েছে।আপনি এমন কিছু লোককে টার্গেট করতে পারেন যারা মাটি দিয়ে অনেক ভালো কিছু উপকরণ বানাতে পারেন।

 

তারপরে অনলাইনে একটি ফেসবুক পেজের মাধ্যমে এই সকল উপকরণ গুলো মানুষের মধ্যে প্রচার করতে পারেন এবং বিক্রি করতে পারেন।

 

সঠিকভাবে যদি এই ব্যবসাটি করতে পারেন তাহলে ছাত্রজীবনে পড়াশোনার পাশাপাশি এখান থেকে আপনি ভালো কিছু করতে পারবেন। তাই চাইলে এ ব্যবসাটিকে টার্গেট করতে পারেন।

 

৭.বড় বড় অনুষ্ঠানের ইভেন্ট প্লান এবং যাবতীয় কাজ সম্পাদনা 

 

আমাদের দেশে প্রায়ই কোন না কোন জায়গায় বড় অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। আর এই সকল অনুষ্ঠানগুলোর দায়িত্ব কেউ না কেউ নিয়ে থাকে।ছাত্র জীবনে একটি টিম তৈরি করা যায় যে টিমটা বড় বড় অনুষ্ঠানের ইভেন্ট প্লান এবং যাবতীয় কাজ সম্পাদন করবে।প্রতিটি অনুষ্ঠানের কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করার জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পেয়ে যাবে। তাই ছাত্রদের জন্য ব্যবসার মধ্যে এই ব্যবসাটি করা যেতে পারে।

 

৮.অনলাইনে প্রোডাক্ট শপ তৈরি

 

অনলাইনে প্রোডাক্ট তৈরি করার জন্য আপনার তেমন বেশি কিছু করা লাগবে না। শুধুমাত্র একটি ফেসবুক পেজ ব্যবহার করেই এই পেজটিতে বিভিন্ন ধরনের প্রোডাক্টের প্রচার করার মাধ্যমে আপনারা এ কাজটি করতে পারবেন।

 

ধরুন আপনার ফেসবুক পেজ টিতে বিভিন্ন ধরনের কসমেটিকস মালামাল রয়েছে আপনাকে এবার এগুলোর প্রচার করতে হবে এবং যখন এগুলো দেখে কাস্টমাররা অর্ডার করবে তখন তাদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। বর্তমানে অনেকেই এই ব্যবসাটা করার মাধ্যমে ভালো অর্থ উপার্জন করছেন। তাই ছাত্রদের জন্য ব্যবসার মধ্যে এই ব্যবসাটি করা যেতে পারে।

 

৯.কফি শপের দোকান দেওয়া যেতে পারে

 

ছাত্রজীবনে যদি কফিশপের দোকানটি দিতে পারেন তাহলে অবশ্যই এটি ভালো কোন একটি নির্জন স্থানে যেতে হবে। আপনি ফ্রি সময়টাতেই কফিশপের দোকানটি চালাতে পারেন এবং এখান থেকে পড়াশোনার খরচ পোষাতে পারেন।

 

তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন কফিশপের দোকান চালাতে গিয়ে পড়াশোনার কোনো ক্ষতি না হয়। আপনার কফিশপের দোকানটির যদি একবারে জনপ্রিয় হয়ে যায় তাহলে এই দোকানটিতে আপনি নিজে না বসে একজন লোক বসাতে পারেন এবং সেখান থেকে আপনি ভালো অর্থ উপার্জন করে নিতে পারেন।

 

১০.ডিজিটাল মার্কেটিং করতে পারেন 

 

বর্তমান সময়ে অনলাইনে ডিজিটাল মার্কেটারদের প্রচুর চাহিদা রয়েছে।তবে ডিজিটাল মার্কেটিং সেক্টরে আপনাকে কাজ করতে হলে অবশ্যই ডিজিটাল মার্কেটিং টা আগে সঠিকভাবে শিখে নিতে হবে তারপর এই সেক্টরে আসতে হবে।

 

এই কাজটার সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে আপনি পড়াশোনা চলাকালীন সময়ে এই কাজগুলো করতে পারবেন। সঠিকভাবে যদি এই কাজটি রপ্ত করা যেতে পারে তাহলে পড়াশোনার পাশাপাশি খুব সহজেই এখান থেকে ভালো পরিমাণে অর্থ উপার্জন করা সম্ভব। তাই ছাত্রদের জন্য ব্যবসা বা Part টাইমে ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজটি করা যেতে পারে।

 

অন্য পোস্টঃস্টক মালের ব্যবসা শুরু করে কোটিপতি হওয়ার উপায়

 

আমাদের শেষ কথা 

 

ব্যবসা ইচ্ছে করলে যেকোনো লোকই করতে পারে। ছাত্রজীবনে যদি পড়াশোনার পাশাপাশি ব্যবসা তে জড়িত হওয়া যায় তাহলে আপনারা এখান থেকেই উদ্যোক্তা হওয়ার গুণাবলী কিছুটা পাবেন।আশা করি ছাত্রদের জন্য ব্যবসার মধ্যে সেরা দশটি ব্যবসা সম্পর্কে আজকের পোস্টটি করার মাধ্যমে জানতে পেরেছেন। তার পরেও যদি কোন বিষয় সম্পর্কে বুঝতে কোন ধরনের অসুবিধা হয়ে থাকে তাহলে কমেন্ট এর মাধ্যমে জানাতে পারেন।

Leave a Reply