সেলুন ব্যবসা হচ্ছে প্রচলিত একটি ব্যবসা আমাদের অনেকের কাছে। অনেকে পার্টটাইম আবার অনেকে ফুলটাইম হিসেবে এই সেলুন ব্যবসা করে থাকেন।
সেলুনে আমাদের কম বেশী সকলেরই যাওয়া লাগে কোন না কোন সময়।নিজেকে সুন্দর এবং পরিপাটি করে তোলার জন্য সেলুন হচ্ছে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান।
অনেকে সেলুন ব্যবসা শুরু করতে চান।যারা সেলুন ব্যবসা শুরু করতে চান আজকের এই আর্টিকেলটি শুধুমাত্র তাদের জন্যই লেখা। আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে সেলুন ব্যবসার বিস্তারিত সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবেঃ-
সেলুন ব্যবসা শুরু করার নিয়ম
সেলুন ব্যবসা শুরু করার আগে আপনাকে বেশ কিছু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। অর্থাৎ আপনাকে এই ব্যবসাটি শুরু করার আগে কিছু পরিকল্পনা করে নিতে হবে তারপর আপনি এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। সেলুন ব্যবসা কিভাবে শুরু করবেন সেই সম্পর্কে নিচে ধাপে ধাপে বলা হলোঃ
ভালো একটি স্থান দেখে দোকান দিতে হবে
সেলুন ব্যবসার খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ এটি। আপনাকে অবশ্যই ভাল একটি স্থান দেখে দোকান দিতে হবে না হলে আপনি কোন ভাবে কাস্টমারদের আকর্ষিত করতে পারবেন না। দোকানটি আপনি যদি কোন মার্কেটে বা রাস্তার পাশে দিতে পারেন তাহলে আপনার কাস্টমার সংখ্যা এই ক্ষেত্রে অনেকাংশে বেড়ে যায়।তাই আপনি সেলুন ব্যবসা শুরু করার আগে অবশ্যই ভালো একটি স্থান দেখে দোকানটি দিবেন।
সেলুনের ব্যবসা করতে হলে কি কি লাগবে
সব ব্যবসাতে যেমন প্রয়োজনীয় কিছু উপকরণের প্রয়োজন হয় তেমনি এই ব্যবসাতেও কিছু উপকরণ লাগবে না হলে আপনি এই ব্যবসাটি করতে পারবেন না।
আপনি সেলুনের ব্যবসা শুরু করার জন্য বাজারে বা মার্কেটে কোন একটি ভালো দোকান ভাড়া নিয়ে সেই দোকানে সেলুনের জন্য ডেকোরেশন করতে পারেন।
আপনি যদি নিজে চুল কাটাতে দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে নিজে শুরু করতে পারেন অথবা চুল কাটায় দক্ষ এবং সেভ করতে দক্ষ এমন একটি কারিগর আপনি আপনার সেলুনে দোকানে নিয়োগ দিতে পারেন।
কারিগর নিয়োগ দেওয়ার পর আপনি দোকানটিতে বড়দের সাথে সাথে ছোটদের চুল কাটার ব্যবস্থা রাখবেন তাহলে কাস্টমার সংখ্যা এই দিক থেকে আরো অনেক বেড়ে যাবে।
আপনি আপনার সেলুনে দোকানে চুল কাটা চুল শেভ করা কত চার্জ করে থাকেন সেই সব একটি পোস্টারে লিখে দিতে পারেন। যাতে করে কাস্টমাররা খুব সহজেই বুঝতে পারে।
প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি যা যা লাগবে
আপনি যখন মার্কেটে ভালো একটি স্থানে দোকান দিয়ে ফেলবেন এবং একজন কারিগর নিয়োগ দিয়ে ফেলবেন এবার প্রয়োজন হবে যন্ত্রপাতির। একটি সেলুনের দোকান চালাতে হলে আপনাকে আয়না, চিরুনি, কাচি,তোয়ালে, সাবান-শ্যাম্পু ব্লেড, ক্রিম লোশন ফেটকারি আরো অনেক ধরনের প্রয়োজনীয় জিনিসের প্রয়োজন হবে।
আপনি ব্যবসা শুরু করার পরপরই এই জিনিসগুলো আপনার সেলুনে দোকানে এনে রেখে দিবেন এবং আপনার কারিগরকে সেগুলো সম্পর্কে ভালোভাবে বুঝিয়ে দিবেন।
যেভাবে সেলুন ব্যবসার মার্কেটিং করবেন
ভালো একটি স্থান দেখে যদি আপনার সেলুনের দোকান দেওয়া শেষ হয়ে যায় এবং আপনার দোকানে কারিগর নিয়োগ দেওয়া যদি হয়ে যায় তাহলে এবার যেটি গুরুত্বপূর্ণ সেটি হচ্ছে আপনার সেলুন দোকানের মার্কেটিং করা।
আপনি যদি দোকানের মার্কেটিং করতে পারেন তাহলে এই ক্ষেত্রে কাস্টমার পাওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে বেড়ে যায়।এর জন্য আপনি সরাসরি কোন ভ্যান গাড়ি ভাড়া করে আপনার দোকানের আশেপাশের বিভিন্ন স্থানে আপনার দোকানের মার্কেটিং করতে পারেন মাইকিং করে।
কেননা নতুন অবস্থায় আপনার দোকানটি হয়তো অনেকেই চিনবে না যে কোন স্থানে রয়েছে তাই আপনি এইভাবে মাইকিং করে মানুষের মাঝে আপনার দোকানের প্রচার করতে পারেন তাহলে আপনার কাস্টমার পাওয়ার সম্ভাবনা আরও বেড়ে যাবে। তাই অবশ্যই সেলুন দোকান দেওয়ার পরে মার্কেটিং টা আপনি করে ফেলবেন।
সেলুন ব্যবসার জন্য কত মূলধন লাগে
সেলুন ব্যবসা শুরু করার জন্য আপনার অবশ্যই প্রয়োজনীয় মূলধনের দরকার হবে। তবে গ্রাম এবং শহর বেঁধে মূলধন এবং বেশি লাগতে পারে এবং আকৃতির দোকানটি কিভাবে দিচ্ছেন তার উপরেও অনেকাংশে মূলধনের পরিমাণ টা নির্ভর করে থাকে।
গ্রামের সেলুনের দোকান দেওয়ার জন্য আপনার মূলধন লাগতে পারে দুই থেকে তিন লক্ষ টাকা এবং আপনি যদি শহরে একটি ভালো স্থানে সেলুন ব্যবসার জন্য দোকান দিতে চান তাহলে অবশ্যই এই ক্ষেত্রে আপনার ৮ লক্ষ টাকা থেকে ১০ লক্ষ টাকা লাগবে পারে। তবে এই খরচের বিষয়টা কমবেশি হতে পারে।
সেলুন ব্যবসায় লাভ কেমন
সেলুন ব্যবসায় লাভের পরিমাণটা অনেক বিষয়ের উপর নির্ভর করে থাকে। আপনি এখানে কি পরিমান ইনভেস্টমেন্ট করেছেন এবং আপনার দোকানের কাস্টমার সংখ্যা কেমন।
সেলুনের ব্যবসার লাভের পরিমাণ তা মূলত দৈনিক হিসাবে নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। আপনি যদি কারিগর নিয়োগ দিয়েছেন উনার ব্যবসাটি শুরু করেন তাহলে তারা আপনাকে দৈনিক টাকা এনে দিবে এবং মাস শেষে আপনি এখান থেকে বুঝতে পারবেন যে কত টাকা এক্ষেত্রে আপনার লাভ হচ্ছে তাদের বেতন এবং খরচ বাদ দিয়ে।
তবে মোটামুটি ধারণা করে বলা যায় যে আপনার দোকানে যদি ভাল কাস্টমার হয়ে থাকে তাহলে আপনি এই সেলুন ব্যবসার মাধ্যমে প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা অনায়াসেই লাভ করতে পারবেন এতে কোন সন্দেহ নেই।
তবে এই ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে সবদিক হিসেব-নিকেশ করে ব্যবসা পরিচালনা করতে হবে এবং সঠিক পদ্ধতিতে তাহলে আপনি এই ব্যবসার মাধ্যমে ভালো কিছু করতে পারবেন।
আমাদের শেষ কথা
বর্তমানে যত ব্যবসা রয়েছে তাদের মধ্যে সেলুন ব্যবসা টি খুবি লাভজনক একটি ব্যবসা।অনেকে শহরাঞ্চলে এবং গ্রাম অঞ্চলে এই ব্যবসা করার মাধ্যমে হাজার হাজার টাকা আয় করে চলেছে। আপনি যদি সঠিক ব্যবসা পদ্ধতি অবলম্বন করে এই ব্যবসাটি করতে পারেন তাহলে আপনিও অনায়াসে এই ব্যবসার মাধ্যমে ভালো টাকা লাভ করতে পারবেন।তাই দ্রুতই শুরু করুন সেলুন ব্যবসা এবং সঠিকভাবে করার মাধ্যমে হয়ে জান একজন সফল ব্যবসায়ী।