আমেরিকা হচ্ছে পৃথিবীর সব থেকে বৃহৎ অর্থনীতির একটি দেশ।বৈশ্বিক অর্থনীতিতে আমেরিকা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।সারা পৃথিবী থেকে প্রতিবছর হাজার হাজার লোক আমেরিকাতে কাজের উদ্দেশ্যে এবং পড়াশোনার জন্য যান। বিশেষ করে স্টুডেন্টদের জন্য আমেরিকায় পড়াশোনা করার দারুন সুযোগ রয়েছে।
কেননা আমেরিকাতে রয়েছে বিশ্বের খুবই জনপ্রিয় অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। তাছাড়া আমেরিকাতে আরো অনেক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে যেগুলোতে পড়াশোনা করার জন্য সারা পৃথিবী থেকে অসংখ্য ছাত্র ছাত্রী যায়। আজকের পোস্টের মাধ্যমে আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা খরচ এবং আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা সহ আমেরিকা ভিসা সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন।
অন্য পোস্ট:কানাডা ভিসা খরচ কত এবং আবেদন করার নিয়ম
আমেরিকা ভিসা পাওয়ার সহজ উপায়
বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা ভিসা পাওয়া অনেকটা জটিল।বর্তমান সময়ে বাংলাদেশীরা চাইলে চারটি উপায় অবলম্বন করে আমেরিকাতে যেতে পারেন। আর এই চারটি উপায়ে এর মাধ্যমে খুব সহজেই আমেরিকা ভিসা পাওয়া যাবে। যেমনঃ-
১.chain migration
২.As a Student Rechers
৩.As a skilled Worker (Eb visa)
৪.As a Entrepreneur
অর্থাৎ বাংলাদেশিরা চাইলে এই চারটি পদ্ধতিতে আমেরিকাতে যেতে পারবে। চারটি পদ্ধতি সম্পর্কে এবার বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
Chain migration
আপনার পরিচিত কেউ বা আপনার বাবা মা যদি আমেরিকাতে বসবাস করে থাকেন সে চাইলে তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জন্য আমেরিকাতে নিয়ে আসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। এই প্রক্রিয়াটি অনেকটা জটিল তবে এই পদ্ধতিতে বেশিরভাগ বাংলাদেশীরা আমেরিকাতে বসবাস করে থাকেন।
As a student Rechers (America student visa)
আপনি যদি একজন ছাত্র হয়ে থাকেন তাহলে এই প্রক্রিয়ায় স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে আমেরিকাতে আসতে পারবেন। আপনি এক্ষেত্রে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে আমেরিকাতে আসতে পারেন পড়াশুনা করার জন্য। বাংলাদেশের অনেক ছাত্রছাত্রী আমেরিকাতে পড়াশোনা করার জন্য আমেরিকার বিভিন্ন ইউনিভার্সিটিতে আবেদন করে থাকেন। তবে আমেরিকাতে স্টুডেন্ট ভিসায় গিয়ে পড়াশোনা করা অনেকটা ব্যয়বহল।
as a skilled worker
আমেরিকাতে যদি কোন কোম্পানিতে কাজ পেয়ে থাকেন তাহলে আপনারা চাইলে আমেরিকা জব ভিসার জন্য ভিসা করতে পারেন। এই প্রক্রিয়ায় আপনাদেরকে আমেরিকা দূতাবাস থেকে যাচাই-বাছাই করার পর যদি তাদের মনে হয় যে আপনি আমেরিকা তে কাজ করার জন্য যোগ্য তাহলে ভিসা দিয়ে দিবে।
As a Entrepreneur
আপনি যদি অনেক বড় ব্যবসায়ী হয়ে থাকেন তাহলে আমেরিকাতে যাওয়ার জন্য এই প্রক্রিয়ায় আবেদন করতে পারবেন। অর্থাৎ আপনাকে এমন একজন ব্যবসায়ী হতে হবে যাতে করে আপনি আমেরিকাতে গিয়ে ১০ জন আমেরিকান নাগরিকের কর্মসংস্থান করে দিতে পারেন। তাহলে তারা আপনাকে সব যাচাই-বাছাই করে আমেরিকাতে যাওয়ার জন্য গ্রীন কার্ড দিবে।
তাহলে আমেরিকা ভিসা ক্যাটাগরির সম্পর্কে এতক্ষণে জেনে গিয়েছেন। এবার আলোচনা করা হবে আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা খরচ বা আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে কিভাবে আমেরিকায় যাবেন সেই বিষয়ে।
অন্য পোস্টঃইতালি ভিসা করতে কত টাকা লাগে
আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা
আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার জন্য অবশ্যই তাদের কিছু নীতিমালা রয়েছে সেগুলো পূরণ করতে হবে। অর্থাৎ এই নীতিমালা গুলো পূরণ করে যে কোন ছাত্র-ছাত্রী চাইলে আমেরিকাতে পড়াশোনা করার জন্য যেতে পারবেন।নিচে আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার জন্য কি কি লাগবে তা উল্লেখ করা হলোঃ-
১.আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার জন্য আবেদনকারীর বয়স অবশ্যই ১৪ থেকে ৭৯ বছরের মধ্যে হতে হবে। কোন ছাত্র-ছাত্রী যদি কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গৃহীত হয়ে থাকেন তাহলে তাদেরকে F1 ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।
২.ছাত্র-ছাত্রীদের আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসায় পড়াশোনা করার জন্য যথেষ্ট খরচ বহন করার ক্ষমতা থাকতে হবে। এক্ষেত্রে ছাত্রর পিতা-মাতা অথবা তার নিকট আত্মীয়স্বজনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের স্টেটমেন্টের প্রয়োজন হবে।
আমেরিকার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে আপনারা আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন অথবা আমেরিকা দূতাবাসের সরাসরি গিয়ে সেখান থেকে এই বিষয় সম্পর্কে পরিপূর্ণভাবে জেনে নিতে পারবেন।
আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসার খরচ
আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসাতে পড়াশোনা করার জন্য আপনার কত খরচ হতে পারে এই বিষয়ে এবার আমি আপনাদেরকে কিছু ধারনা দেওয়ার চেষ্টা করবো।আমেরিকাতে স্টুডেন্ট ভিসা করার আগে আপনাকে জিআরআই রেজিস্ট্রেশন ফি+ চারটি ইউনিভার্সিটিতে স্কোর পাঠানোর জন্য ২০,৫০০ টাকার মত খরচ হবে। আর আপনি যদি দুইটি ইউনিভার্সিটি তে তথ্য পাঠাতে চান তাহলে এক্ষেত্রে আপনার খরচ আসবে সাত হাজার টাকা।
ইউনিভার্সিটি এর আবেদন জন্য আপনাকে ৩৬ হাজার টাকা খরচ বহন করতে হবে।তাছাড়া ট্রানস্ক্রিপ্ট ইস্যু করার জন্য ৯০০০ টাকা খরচ হবে। ট্রানস্ক্রিপ্ট ইস্যু ও ডকুমেন্ট পাঠানোর জন্য ১৩,২০০ টাকার মতো খরচ চলে আসবে। তাহলে এখানে মোট আবেদন খরচ চলে আসছে ৫৮,২০০ টাকার মত এবং আগাম খরচ হয়ে যাবে ৫৩,০০০ টাকা।ভিসা প্রসেসিং করার জন্য আপনাকে এম্বাসি ফি দিতে হবে ১৩৭৬০ টাকা। সেভিস আই ও ডিএস ফর্ম করার জন্য খরচ চলে আসবে ৩৬,৯০০ টাকা।তাছাড়া আমেরিকার যাওয়ার জন্য আপনার প্লেন ভাড়া লাগতে পারে ৮০ হাজার থেকে এক লক্ষ টাকা। সর্বসাকুল্যে আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে আপনাকে আমেরিকা যেতেই মোট তিন লক্ষ টাকার মত খরচ হয়ে যাচ্ছে।
তাছাড়া আমেরিকা গিয়ে পড়াশোনা চলাকালীন খরচ এবং টিউশন ফি সহ আরো অনেক ধরনের খরচ রয়েছে। আর আপনি যদি আমেরিকাতে পড়াশোনার পাশাপাশি রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করতে পারেন তাহলে এক বছরে সেখান থেকে ৩০ হাজার ডলার ইনকাম করতে পারবেন। তারপরেও আমেরিকাতে পড়াশোনা করা অনেকটা ব্যয়বহুল।তবে যারা আমেরিকাতে স্কলারশিপ নিয়ে যান তাদের ক্ষেত্রে খরচের পরিমাণটা খুবই কম হতে পারে।
অন্য পোস্টঃইন্ডিয়ান ভিসা খরচ কত এবং ইন্ডিয়ান ভিসা আপডেট নিউজ
আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা ইন্টারভিউ
আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে আমেরিকায় যাওয়ার আগে আপনার আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা ইন্টারভিউ প্রয়োজন হবে। আপনি যদি আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসার ইন্টারভিউতে একসেপ্ট একসেপ্টেড না হয়ে থাকেন তাহলে কোনভাবেই আমেরিকাতে পড়াশোনার জন্য যেতে পারবেন না। আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা ইন্টারভিউ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে নিচের ভিডিওটি দেখতে পারেন।
শেষ কথা, আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসার খরচ বা আমেরিকা স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার জন্য কি কি লাগবে আশা করি আজকের পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে এই বিষয়ে পরিপূর্ণ ধারণা পেয়েছেন। তারপরেও যদি আমেরিকা ভিসা নিয়ে কোন ধরনের প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে সরাসরি কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আপনার প্রশ্নটির খুবই দ্রুত সময়ের মধ্যে উত্তর দেওয়া হবে।